মঙ্গলবার, ১৭ মে ২০২২
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | ছবি গ্যালারী | শিরোনাম » নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই প্রতিবেশী দেশে গম রফতানি হবে: ভারতীয় হাইকমিশন
নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই প্রতিবেশী দেশে গম রফতানি হবে: ভারতীয় হাইকমিশন
গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলেও খাদ্য নিরাপত্তার অংশ হিসেবে প্রতিবেশী দেশসহ অন্যান্য দেশ ভারত থেকে এ খাদ্যশস্য সংগ্রহ করতে পারবে। গতকাল সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গম রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলেও প্রতিবেশী দেশগুলো ভারত থেকে গম সংগ্রহ করতে পারবে। এ ছাড়া রফতানির জন্য ইতোমধ্যে যেসব ঋণপত্র ছাড় দেওয়া হয়েছে, সেই পরিমাণ গম রফতানিতে এ নিষেধাজ্ঞা কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে এতে উল্লেখ করা হয়।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে ভারতের গম রফতানির ‘নিষেধাজ্ঞা’র খবর প্রকাশিত হয়েছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অভ্যন্তরীণ খাদ্য চাহিদা পূরণ, মুদ্রাস্ফীতি রোধ এবং ভারতের প্রতিবেশী এবং খাদ্য নিরাপত্তার উদ্বেগ আছে এমন দেশের প্রকৃত চাহিদা মেটাতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত শনিবার ভারতের বাণিজ্য সচিব বি ভি আর সুব্রামানিয়াম বলেছেন, যে গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশি দেশগুলোর খাদ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে না।
সুব্রামানিয়াম আর বলেন, ভারতে গম সরবরাহে কোনো সংকট নেই এবং গম ও গমের আটার অভ্যন্তরীণ দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা সাময়িক।
এদিকে, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ভারত গম রফতানি বন্ধ করলেও বিশেষ পরিস্থিতিতে ভারত থেকে গম আনা যাবে। গম উৎপাদনকারী আরও ৫টি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে, ভারত গম দেবেই না তা নয়। আপতত তারা গম দেবে না। তবে ভারতের সঙ্গেও দেনদরবারের সুযোগ আছে। সোমবার (১৬ মে) বেলা ১১টায় সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ এ বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ভারত গম রফতানি বন্ধের কোনো প্রজ্ঞাপন দেয়নি, আর দিলেও বাংলাদেশে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন খাদ্য মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। রোববার (১৫ মে) দুপুরে সিলেট সদর খাদ্যগুদাম পরিদর্শনকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
গত ১৪ মে ভারত গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। আপাতত তারা আর গম রফতানি করবে না এমন ঘোষণার পরপরই বিশ্ববাজারে বেড়েছে গমের দাম।
একদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটে বিশ্বে গমের সবচেয়ে বড় জোগানদাতা দুটি দেশ গম রফতানি থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয় ও কিছু ক্ষেত্রে বিরত থাকতে বাধ্য হয়, অন্যদিকে নিজেদের খাদ্য নিরাপত্তার কথা ভেবে ভারত জানিয়েছে, তারা আর গম রফতানি করতে পারবে না।
চারদিকে মূল্যস্ফীতির এ রমরমা দশায় ভারতের এমন ঘোষণায় বেড়েছে গমের দাম। গমের শিকাগো বেঞ্চমার্কের হিসাব অনুযায়ী, এক লাফে গমের দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। গত দুই মাসে গমের এ মূল্য উল্লম্ফন সর্বোচ্চ।
গমের দাম বেড়ে যাওয়ার প্রভাব শুধু শস্যদানার ওপরে নয়, পড়েছে নানা প্যাকেটজাত ভোগ্যপণ্যের ওপরও। দাম বেড়ে গেছে রুটি, কেক, নুডলস ও পাস্তার।
তবে ভারত জানিয়েছে, ইতোমধ্যে যাদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে, তাদের কাছে চুক্তি অনুযায়ী গম সরবরাহ করবে সরকার। এ ছাড়াও যারা সংকটের মুখোমুখি হবে, তাদের ব্যাপারে ভারত নমনীয় হবে।
এদিকে ভারতের এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে জার্মানির কৃষিমন্ত্রী সেম ওজডেমির বলেন, ‘সবাই যদি এভাবে রফতানি বন্ধ করে দেয় ও বাজার সংকুচিত করে ফেলে, তাহলে সংকট আরও বৃদ্ধি পাবে।’
রফতানি বন্ধের ঘোষণার আগে ভারত জানিয়েছিল, এ বছর তারা ১০ মিলিয়ন টন গম রফতানি করবে।